
আট রাজকীয় বৃক্ষ
A free resource from
KidsOut - the fun and happiness charity
This story is available in:
This story is available in:
একজন প্রতাপশালী রাজা ছিলেন যিনি সাতজন রাণীকে বিবাহ করেছিলেন। রাজা একজন ভাল প্রশাসক ও একজন উদার ব্যক্তি ছিলেন, কিন্তু তাঁর সিংহাসনের কোন উত্তরাধিকারী ছিল না এবং এটা তাঁকে খুব দুঃখী করেছিল।
একদিন, রাণীদের মধ্যে সবথেকে ছোট এবং সবথেকে সুন্দরী রাণী গর্ভবতী হলেন। এই খবরে রাজা অতিব আনন্দিত হয়ে উঠলেন এবং তাঁর প্রথম সন্তানের জন্মের আশায় খুব ধুমধাম করে উদযাপন করলেন।
বড় রাণীরা আরো এবং আরো বেশি ঈর্শ্বাপরায়াণ হয়ে পরলেন যেহেতু তাঁদের স্বামী, রাজা ছোট রাণীকে অনেক বেশি মনযোগ দিচ্ছেলেন এবং তাঁকে প্রচুর দামী দামী উপহার সামগ্রীতে ভরিয়ে দিচ্ছিলেন।
যখন চূড়ান্ত দিন উপস্থিত হয়, ছোট শুধুমাত্র একটি সন্তানের জন্ম দিলেন না, বরং আটটি সুন্দর বাচ্চার জন্ম দিলেন: সাতটি সুন্দর ফুটফুটে পুত্র সন্তান এবং একটা সুন্দর কন্যা সন্তান।
ঈর্শ্বাপরায়ণ রাণীরা, তাঁদের নিজেদের কোন সন্তান হবার সম্ভাবনা ছিল না, তাই যখন তাঁরা আটটি সন্তানের জন্মদানের কথা শুনলেন তখন তাঁরা চুপিচুপি পরিকল্পনা করলেন। রাতের বেলায়, রাজা তাঁর পুত্র ও কন্যার সাথে দেখা করার সুযোগ পাবার আগে, রাণীরা প্রতিটি শিশুদের চুরি করে হত্যা করে বাগানে পুঁতে দিল যাতে তাদের আর দেখা না যায়।
হিংসুটে রাণীরা প্রতিটি শিশুপুত্র ও শিশুকন্যার বদলে একটি করে কুকুরের বাচ্চা রেখে দিল। তখন তাঁরা রাজাকে রাণীর ঘরে দ্রুত আসতে বলল। প্রথম স্ত্রী বলল ‘দেখুন আপনার আদরের রাণী পশুর জন্ম দিয়েছে।’
আরেকজন বলল, 'এটা নিশ্চয় যাদুবিদ্যা'। 'আপনি আপনার ছোট রাণীকে আমাদের রাজ্য থেকে বিতাড়িত করুন।'
যদিও ছোট রাণী রাজার কাছে নিজের নির্দোষ হবার কথা বললেও, তাঁকে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করা হল এবং তাঁকে নির্বাসিত জীবন যাপন করতে বাধ্য করা হল, তাঁর প্রিয় সন্তানদের কি হয়েছিল কখনো জানতেই পারলো না।
বছরের পর বছর কেটে গেল, এক উষ্ণ বসন্তে, খুব অদ্ভুত এক ঘটনা ঘটলো। যেখানে হিংসুটে রাণীরা আটটা সন্তানকে পুঁতে রেখেছিল, সেখানে সাতটা চাঁপাফুলের আর একটা পারুলফুলের গাছ জন্মালো, যা সুন্দর ও রঙিন এবং সুবাসে সমৃদ্ধ।
যখন হিংসুটে রাণীরা গাছগুলির কাছে সুন্দর ফুল ছিঁড়তে চেষ্টা করতেই গাছের ডালগুলি তাঁদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছিল। যখন রাজা সেখানে গিয়ে ফুল তুলতে চেষ্টা করলেন, গাছের ডালগুলি আবার সরে গেল যাতে গাছের ফুলগুলি গাছেই থাকে।
তখন একটি নরম কণ্ঠস্বর সুবাসিত হাওয়ায় ভেসে এল। 'নির্বাসিত রাণীকে আমাদের কাছে নিয়ে এসো এবং দেখুন সে আমাদের ফুলগুলি তুলতে পারে কিনা।'
রাজা তাঁর সবথেকে বিশ্বস্ত প্রহরীকে আদেশ দিলেন নির্বাসিত রাণীকে নিয়ে এসে তাঁর প্রাসাদ ফিরিয়ে দিতে।
তাঁর ফিরে আসার পরে, রাজা ছোট রাণীকে রহস্যময় গাছের ডাল থেকে ফুল ছিঁড়ে আনাতে বললেন। যখন ছোট রাণী প্রথম চাঁপাফুল গাছের কাছে গিয়ে এক ফুল তুলতে গেল, একটা বাচ্চা ছেলে ফুলের মধ্যে থেকে আর্বিভূত হয়ে তার মায়ের সাথে পুনরায় মিলিত হলো। একই ঘটনা ঘটল দ্বিতীয় চাঁপাফুল গাছ, ও তৃতীয়, এবং সকল চাঁপাফুল গাছগুলিতে আর সকল সাত শিশুপুত্র তাঁদের মায়ের কাছে ফিরে এলো। আর যখন রাণী পারুল গাছের কাছে ফুল তুলতে গেলেন, একটা সুন্দর শিশুকন্যা ফুলের মধ্যে থেকে আবির্ভূত হয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরল।
রাজা তাঁর পরিবারকে আবার একসাথে ফিরে পেয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়ে গেলেন এবং তাঁকে ক্ষমা করে চিরদিনের জন্য প্রাসাদে ফিরে আসতে বললেন।
রাজা এটাও জানতে পারলেন যে তাঁর ছোট রাণীর থেকে আট সন্তান এবং তাঁকে আলাদা করার এই কু-পরিকল্পনাটি বড় রাণীর। তিনি অবিলম্বে প্রতিটি রাণীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করলেন এবং আর কখনোই তাঁদের সাথে কথা বলেন নি।
দুষ্ট রাণীদের কারাবাসে পাঠিয়ে, রাজা ছোট রাণীকে নিয়ে সুখে দিন কাটাতে লাগলেন আর তাঁদের আট সুন্দর সন্তান স্বাস্থ্যবান ও সুস্থ হয়ে বড় হয়ে উঠতে লাগল। এই গল্পটা দ্রুত রাজ্য জুড়ে প্রসারিত হতে থাকে এবং লোকেরা বুঝতে পারে যে হিংসা বা খারাপ কাজ থেকে কোন ভাল কিছু আসতে পারে না।
Enjoyed this story?